গুলশান থানা কর্তৃক,
ব্যারিস্টার আহসান হাবিব গ্রেফতার!

- আপডেট সময় : ১২:১১:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০২৫ ৩৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধি:
শনিবার (০৪ অক্টোবর) ভোরে রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার আহসান হাবিব ভূঁইয়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।দুপুরের দিকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ব্যারিস্টার আহসান হাবিব ভূঁইয়া আওয়ামী লীগ নেতা এম এ সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, গত ১৩ সেপ্টেম্বর দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের একটি মামলায় ভোরে গুলশানের ১১৮ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আহসান হাবিব ভূঁইয়ার আইনজীবী সারোয়ার হোসাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযোগ বলেন, ‘বারবার থানায় গেলেও তার (আহসান হাবিব) সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি আটকের কারণও জানায়নি পুলিশ। অথচ সংবিধানে বা সিআরপিসিতে তার এ অধিকার রয়েছে।’
সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘একজন ফেলো ব্যারিস্টার গুলশান থানা কর্তৃক গ্রেফতার হয়েছে। রাত ৩টায় গিয়ে দরজা ধাক্কাধাক্কি, শেষ পর্যন্ত ৫টা ৩০ মিনিটে গ্রেফতার। তিনি কি দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী না ডাকাত, যে গভীর রাতে তাকে গ্রেফতার করতে যেতে হবে? মিথ্যা মামলায় তাকে জড়ানো হয়েছে। তথাকথিত ক্ষমতাসীন সাবেক শ্বশুরের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা।’
‘আইনগত সহযোগিতা করার জন্য সকাল ১০টায় গুলশান থানায় গেলাম। ডিউটি অফিসারকে অনুরোধ করলাম, উক্ত ব্যারিস্টারের সাথে সাক্ষাতের জন্য। তিনি বললেন অনুমতি নাই, ওসির সাথে কথা বলতে হবে। ওসি সাহেবকে ফোন দিলাম, তিনি ফোন ধরলেন না। পরে ডিউটি অফিসারের মাধ্যমে নোট পাঠালাম, তাও তিনি সাক্ষাৎ করতে দিলেন না। পরে আরেকজন সিনিয়র অফিসারকে রিকোয়েস্ট করলাম, তিনিও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করলেন না।’
তিনি লেখেন, ‘২য় বার আবার দুপুর ১২টার সময় গুলশান থানায় গেলাম—একই ফল। আইনজীবীর সাথে পরামর্শের অধিকার থেকে ব্যারিস্টার সাহেব বঞ্চিত হলেন। আইন-টাইন আসলে কিছুই না, এই ধরনের ওসিরা যা ভাবে, সেটাই আইন।’
‘সিআরপিসির সর্বশেষ amendment দেখুন। এর আগে আপিলেট ডিভিশনের নির্দেশনা রয়েছে যে, কেউ গ্রেফতার হলে আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করার সুযোগ দিতে হবে। আইনজীবী থানায় গেলে, তাকে যথাযথভাবে রিসিভ করে, তার মক্কেলের সঙ্গে পরামর্শ করার সুযোগ করে দেওয়া পুলিশের আইনগত দায়িত্ব। কিন্তু পুলিশ তো এই আইন মানে না। কে পুলিশকে এই আইন মানতে বাধ্য করবে। পুলিশ তো মূলত চলে রাজনৈতিক নির্দেশনায়।’
তিনি আরও লেখেন, ‘একজন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ও ব্যারিস্টারের ক্ষেত্রে যদি হয় এই অবস্থা, তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা সহজেই অনুমেয়। এটাই হলো ব্যর্থ রাষ্ট্রের নমুনা। এটাই হলো পুলিশি রাষ্ট্রের নমুনা। একজন গ্রেফতারকৃত নাগরিকের অধিকার বঞ্চিত করার জন্য, এই ওসিকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। এই সমস্ত ওসিরা সরকারকে ডুবায়, রাষ্ট্রকে ডুবায়।’
‘এ দেশ কি আসলেই কখনো ঠিক হবে? মিথ্যা মামলা তো সেই আওয়ামী লীগের সময়ের চেয়েও বেশি হচ্ছে। মামলা বাণিজ্য তো চলছে একইভাবে। দেশের কোনো একটি নাগরিকের বিরুদ্ধে কেন মিথ্যা মামলা হবে, সে যে পথ, যে মতের হোক না কেন। এই মামলা বাণিজ্য, এই মিথ্যা মামলা থামাতে হবে এখনই।’